সাড়ে ৭ লাখ ডলার বিনিয়োগ পেয়েছে বাংলাদেশি স্ট্যানফোর্ড গ্র্যাজুয়েটের এআই স্টার্টআপ

বাংলাদেশি স্ট্যানফোর্ড গ্রাজুয়েট শেখ সৃজনের স্টার্টআপ প্রতিষ্ঠান ‘স্টোরি ইঞ্জিন ইঙ্ক’ স্বনামধন্য ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠান আন্দ্রেসেন হরোউইতজ থেকে প্রি-সিড অর্থায়নে ৭ লাখ ৫০ হাজার ডলার পেয়েছে। 

শেখ সৃজন স্টোরি ইঞ্জিনের সহ-প্রতিষ্ঠাতা। অন্য দুই সহ-প্রতিষ্ঠাতার নাম ঝিঝু ঝৌ ও ওয়ানরং হে। তাদের এই স্টার্টআপের লক্ষ্য জেনারেটিভ এআই প্রযুক্তির মাধ্যমে ওয়েবটুন এবং অ্যানিমে নির্মাণে বিপ্লব ঘটানো।

সৃজন জানান, স্টোরি ইঞ্জিন ব্যবহারকারীরা একাধিক প্যানেলজুড়ে সামঞ্জস্যপূর্ণ, নিয়ন্ত্রণযোগ্য চরিত্র এবং ভিজ্যুয়াল স্টোরি তৈরি করতে পারবেন। মিডজার্নির মতো জনপ্রিয় এআই ইঞ্জিনগুলোতে ব্যবহারকারীরা যেসব সমস্যার মুখোমুখি হয় সেগুলো এখানে থাকবে না।

‘মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ৫৩ শতাংশ জেন জি অ্যানিমে দেখে। কিন্তু নিজস্ব গল্প তৈরি করার উপকরণ খুব কম তরুণ-তরুণীর কাছে আছে,’ বলেন সৃজন।

তার দাবি, ইউটিউব যেভাবে ভিডিও কনটেন্টকে সবার মাঝে পৌঁছে দিয়েছে, একইভাবে তাদের স্টার্টআপও সবাইকে ওয়েবটুন ও অ্যানিমে তৈরির সুযোগ করে দেবে। 

আন্দ্রেসেন হরোইতজের বিনিয়োগ তাদের পরিচালনা ব্যয় বাড়াতে এবং এআই মডেলগুলোকে আরও ভালোভাবে প্রশিক্ষণ দিতে সাহায্য করবে বলেও মনে করছেন সৃজন।

এদিকে গুগল ক্লাউড থেকেও ৫ লাখ ডলারের ক্রেডিট পেয়েছে স্টোরি ইঞ্জিন। সৃজনের মতে, এই ক্রেডিট যেকোনো নতুন স্টার্টআপের জীবনকালকে সম্প্রসারিত করতে সাহায্য করে।

ঢাকায় বেড়ে ওঠা সৃজন এসএসসি পাসের পর উচ্চতর শিক্ষার জন্য যুক্তরাজ্যের ইউডব্লিউসি আটলান্টিকে যান। এরপর ক্যালিফোর্নিয়ার স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স বিভাগে ভর্তি হন।

স্ট্যানফোর্ডে থাকাকালীন তিনি শিক্ষার্থীদের পরামর্শ (কনসাল্টিং) দেওয়ার প্রতিষ্ঠান টাইটানস এডুকেশন প্রতিষ্ঠা করেন। এই প্ল্যাটফর্ম ১০০ জনেরও বেশি শিক্ষার্থীকে শীর্ষস্থানীয় মার্কিন কলেজগুলোতে ভর্তি হতে সাহায্য করেছে বলে জানান সৃজন। বাইরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আবেদন ও বৃত্তির ব্যাপারে বাংলাদেশী শিক্ষার্থীদের জানাশোনার অভাব দেখেই টাইটানস এডুকেশনের চিন্তা মাথায় আসে সৃজনের।

টাইটানস এডুকেশনের সাফল্যের পর সৃজন এআই-চালিত অ্যাপ্লিকেশনের দিকে ঝুঁকেন। তার সহ-প্রতিষ্ঠাতাদের নিয়ে তখন গ্ল্যাটো এআই নামে একটি এআই টুল তৈরি করেন, যা যেকোনো পণ্যের ইউআরএলকে ৬০ সেকেন্ডের টিকটক বিজ্ঞাপনে রূপান্তরিত করে। এটিও দারুণ জনপ্রিয়তা পায়।

সৃজনের দাবি, উদ্যোক্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠাতাদের অভিজ্ঞতা ও তাদের একাডেমিক অর্জন দেখেই আন্দ্রেসেন হরোউইতজ এ ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করে। ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম এবং লিফটের মতো টেক জায়ান্টগুলোতে বিনিয়োগের জন্য পরিচিত এই শীর্ষস্থানীয় ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠান।

স্টোরি ইঞ্জিনের আলফা সংস্করণ পরীক্ষামূলকভাবে কিছু ব্যবহারকারীর জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছে। ডিসকর্ডেও উন্মুক্ত আছে এই স্টার্টআপ। যেখানে এটি ব্যবহার করে আপনি নতুন ওয়েবটুন বা অ্যানিমে তৈরি করতে পারবেন এবং এর মান নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানাতে পারবেন। বর্তমানে নিজেদের ওয়েব ও মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন তৈরির কাজ করছে স্টোরি ইঞ্জিন।

ইংরেজি থেকে ভাবানুবাদ করেছেন কিরো আদনান আহমেদ  (সংক্ষেপিত)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *