
বাংলাদেশে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের সর্বোচ্চ ৯৩ শতাংশই অনলাইনে ভিডিও দেখা ও ভিডিও কল করেন। এছাড়াও ৮৭ শতাংশ সোশ্যাল মিডিয়া ও ইনস্ট্যান্ট ম্যাসেজিং, ৮৪ শতাংশ অনলাইন বিনোদন, ৫৩ শতাংশ অনলাইনে পণ্য সেবা, ৪৯ শতাংশ অনলাইন আর্থিক সেবা, ৪৮ শতাংশ সরকারি সেবা ও শিক্ষা এবং ৫৬ শতাঙশ অনলাইনে তথ্য খুঁজতে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার করেন।
পরিসংখ্যান বলছে, বংলাদেশে শহরের ৮০ শতাংশই মোবাইল ফোনের মালিক। এর মধ্যে ইন্টারনেট ব্যবহার করেন মাত্র ৪৩ শতাংশ। একইভাবে গ্রামের ৭৩ শতাংশের হাতেই মোবাইল থাকলেও ইন্টারনেট ব্যবহার করেন মাত্র ২৭ শতাংশ। তবে শহরের ৮১ শতাংশ এবং গ্রামের ৭২ শতাংশের মধ্যেই রয়েছে ইন্টারনেট সচেতনতা। তাই প্রতিদিন শহরের ৪০ শতাংশ এবং গ্রামের ২৪ শতাংশ ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। আর শহরের ৩৮ শতাংশ এবং গ্রামের ১৮ শতাংশ অনিয়মিত ইন্টারনেট ব্যবাহার করেন। শহরের ১৯ শতাংশ এবং গ্রামের ২৮ শতাংশই মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারের উদাসীন। মোবাইল ইন্টারনেট ক্রয় ক্ষমতায় এবং নিরাপত্তা ও সুরক্ষার অভাবই এর পেছনের মূল কারণ।
চলতি বছরের অক্টোবরে মুঠোফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর বৈশ্বিক সংগঠন গ্লোবাল সিস্টেম ফর মোবাইল কমিউনিকেশনস অ্যাসোসিয়েশন (জিএসএমএ) প্রকাশিত ‘দ্য স্টেট অব মোবাইল ইন্টারনেট কানেকটিভিটি ২০২৪’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
জরিপে দেখানো হয়েছে, বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষ মোবাইল ইন্টারনেট সম্পর্কে জানেন; কিন্তু ব্যবহার করেন না। মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের শহর ও গ্রামের মানুষের কাছে বড় বাধা হচ্ছে সাক্ষরতা ও ডিজিটাল দক্ষতার অভাব। এরপর শহরের মানুষের কাছে নিরাপত্তা ও গ্রামের মানুষের কাছে সামর্থে৵র বিষয়টি প্রাধান্য পেয়েছে।
প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০২২-২৩ সালের মধ্যে বাংলদেশের শহরের চেয়ে গ্রামে মোবাইল ফোন ব্যবহার কমেছে। একই সময়ে স্মার্টফোনের ব্যবহার ১০ শতাংশ এবং ১৫ শতাংশ ফিচার ফোন ব্যবহার কমেছে। তবে দেশে শহরের চেয়ে গ্রামের মানুষ মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারে বেশি আগ্রহী। শহরের ৪১ শতাংশ এবং গ্রামের ২৬ শতাংশ মানুষ স্মার্টফোন ব্যবহার করলেও শহরের ৪৩ শতাংশ এবং গ্রামের ২৭ শতাংশ মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। সপ্তাহ ভিত্তিতে গড়ে মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর ৮ দশমিক ২ শতাংশ শহরের এবং ৮ শতাংশই গ্রামের। এর মধ্যে নারী ৭.৩ শতাংশ এবং পুরুষ ৮.৬ শতাংশ। বয়স হিসেবে ব্যবহারকারীদের ৮.৩ শতাংশের বয়সই ১৮-৩৪ বছরের মধ্যে। ৩৫ বছরের ওপরের হার সাড়ে সাত শতাংশ।
জরিপে বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, মিসর, কেনিয়া, নাইজেরিয়া, সেনেগাল, ইথিওপিয়া, উগান্ডা, গুয়াতেমালা ও মেক্সিকোর মানুষের ওপর জরিপ করা হয়েছে। ভারত ও ইথিওপিয়া ছাড়া প্রতিটি দেশের ১ হাজার মানুষের ওপর জরিপ করা হয়েছে।