শিশুর মানসিক বিকাশে প্রযুক্তির প্রভাব

বর্তমান সময়ে ইন্টারনেট ছাড়া আমরা অচল। কাজের জন্য আমাদের প্রতিদিন একটি দীর্ঘ সময় কাটাতে হয় ইন্টারনেটের দুনিয়ায়। তবে বিজ্ঞানের এ আশীর্বাদ আমাদের জন্য নেতিবাচক ফল নিয়ে আসতে পারে সামান্য অসচেতনতার কারণে। বড়দের পাশাপাশি ছোটরাও এখন এই দুনিয়ায় বন্দি হয়ে যাচ্ছে। ঘণ্টার পর ঘণ্টা তারা ব্যয় করছে কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ট্যাব কিংবা স্মার্টফোন নিয়ে ইন্টারনেটের দুনিয়ায়। যা তাদের জন্য ভীষণ ক্ষতিকর। আর শিশুদের এই ক্ষতি থেকে রক্ষা করতে অভিভাবকদেরকেই ভূমিকা নিতে হবে।

Young boy relaxing on a sofa, using a smartphone, indoors.

ইন্টারনেট আমাদের জন্য আশীর্বাদ। এর কল্যাণে আমরা খুব সহজেই এবং খুব কম সময়েই হাতের নাগালে পেয়ে যাই নানা তথ্য। নানা তথ্য জানার ক্ষেত্রে শিশুদের জন্যও ইন্টারনেট হতে পারে দারুণ একটি মাধ্যম। ক্লাসের পড়া থেকে শুরু করে নানা ধরনের প্রজেক্টের কাজের জন্য তাদের নিত্যদিনই নানা তথ্যের প্রয়োজন পড়ে। যা হাতের নাগালে থাকা প্রযুক্তির ব্যবহারের মাধ্যমে শিশুরা সহজেই সংগ্রহ করতে পারে। আজকাল শিশুরা বিনোদনের মাধ্যম হিসেবেও ব্যবহার করছে ইন্টারনেট। বাইরে যখন খেলা বা বিনোদনের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা নেই, তখন এই প্রযুক্তি হয়ে ওঠেছে তাদের সঙ্গী। নানা শিক্ষণীয় বিষয়ের পাশাপাশি বিনোদনের নানা উপকরণ ছড়িয়ে রয়েছে নেট দুনিয়ায়। সাধারণ জ্ঞান বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ইন্টারনেট শিশুকে সাহায্য করে নানাভাবে। বাইরের দেশগুলোয় কী হচ্ছে তা সে জানতে পারে চটজলদি। যা শিশুকে সামাজিক হয়ে ওঠতে সাহায্য করে। তবে এসবের পাশাপাশি ইন্টারনেটের নেতিবাচক দিকও কম নয়। বিশেষ করে শিশুদের ভবিষ্যতের জন্য হুমকি বলে বিবেচনা করছেন অনেক বিশেষজ্ঞ। একটি শিশু যখন খুব সহজেই হাতের মুঠোয় স্মার্ট ফোন পেয়ে যায়, তখন তার নানা খারাপ বিষয়ের সঙ্গে পরিচিত হওয়ার আশঙ্কা থাকে। যা তাকে ধীরে ধীরে বিপথে নিয়ে যেতে পারে। ইন্টারনেটে অবাধ ব্যবহার তাকে নানা খারাপ সাইটগুলো সম্পর্কে ধারণা দেয়। যাতে তার কোমল মনে একটি নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয়। এছাড়া ঘণ্টার পর ঘণ্টা কম্পিউটারের সামনে বসে থেকে গেম খেলা তাদের শারীরিক অবস্থার পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যেরও ক্ষতির কারণ হয়। দীর্ঘ সময় প্রযুক্তির ব্যবহার দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ করে আনে অনেক সময়। যার ফলাফল খুব কম বয়সে চোখে কম দেখা। এজন্য প্রয়োজন শেষ হলেই শিশুকে প্রযুক্তি থেকে দূরে রেখে বই কিংবা পরিবারে সঙ্গে সময় কাটাতে অভ্যস্ত করতে হবে।

রইলো কিছু পরামর্শ

  • আপনার শিশুকে ইন্টারনেট ব্যবহারের সময় নির্দিষ্ট করে দিন।
  • শিশুর ব্রাউজার হিস্টোরিতে গিয়ে দেখুন সে কোন সাইটে গিয়েছে।
  • প্রয়োজনে সিকিউরিটি টুল ও অ্যাপস ব্যবহার করুন।
  • সন্তানের সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ুন, ইন্টারনেটের বিপদগুলো জানান।
  • প্রযুক্তি নিয়ে আলোচনা করুন।
    নিয়মিত প্রাইভেসি সেটিং পরীক্ষা ও নিয়ন্ত্রণে রাখা উচিত।
  • অপরিচিতদের সঙ্গে চ্যাট করবেন না। ব্যক্তিগত কোনো বিষয় জানাবেন না।
  • প্রয়োজনে ইগনোর ও ব্লকের রিপোর্ট জেনে নিন।
  • এমনকি বাসায় থাকলেও অ্যাকাউন্ট থেকে লগ অফ করতে ভুলবেন না।
  • সবচেয়ে প্রিয় মানুষটিকেও আপনার পাসওয়ার্ড বলবেন না।
  • বিশেষ চিহ্নের সাহায্যে শক্তিশালী পাসওয়ার্ড তৈরি করুন।

ইত্তেফাক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *